মাসে মাত্র ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগে ৫ বছরে মিলবে ৭ লক্ষ টাকা! পোস্ট অফিসের সুরক্ষিত সঞ্চয় প্রকল্প

আপনি কি স্বল্প বিনিয়োগে বড় রিটার্নের স্বপ্ন দেখছেন? তাহলে পোস্ট অফিসের রেকারিং ডিপোজিট (RD) স্কিম হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ বিকল্প। শুধুমাত্র এই বিনিয়োগে ৫ বছরের সঞ্চয় প্রকল্পে মাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জমা রেখে আপনি ভবিষ্যতে পেতে পারেন মোটা অঙ্কের টাকা রিটার্ন, তাও আবার একেবারে ঝুঁকিমুক্তভাবে, এখানে টাকা রাখলে কোনরকম রিস্ক নেই। সরকারের গ্যারান্টিযুক্ত এই স্কিমে আপনি পেয়ে যাবেন সুরক্ষিত ও নির্ভয়যোগ্য স্থিতিশীল রিটার্ন।

বিশেষভাবে মনে রাখবেন এটি পোস্ট অফিসের একটি রেকর্ডিং ডিপোজিট স্কিম। পোস্ট অফিসের এই RD স্কিমে মাসে ন্যূনতম ১০০ টাকা জমা রাখা যায়। অর্থাৎ এখানে নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত সকলেই আবেদন জানাতে পারবেন এবং মাসে 100 টাকা করে জমা করতে পারবেন। এখানে বার্ষিক ৬.৭ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়, যা ত্রৈমাসিক চক্রবৃদ্ধি হারে হিসাব করা হয়। এই স্কিমে আপনি নিজের ইচ্ছামতো আরো বেশি অংকের টাকা জমা রাখতে পারেন, কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। এখানে সকল ধরনের ব্যক্তিবর্গ অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি, যৌথ অ্যাকাউন্টধারী, এমনকি ১০ বছরের বেশি বয়সী শিশু এবং মানসিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরাও এই স্কিমে বিনিয়োগ করতে পারেন।

যদি কোন ব্যক্তি ১০,০০০ করে মাসে মাসে এই স্কিমে টাকা জমা রাখেন, তাহলে ৫ বছরে আপনার মোট জমা হবে 6 লক্ষ টাকা। এর পাশাপাশি আপনি সুদ হিসেবে পাবেন ১,১৩,৬৫৯ টাকা অতিরিক্ত পেয়ে যাবেন। অর্থাৎ, ৫ বছর পরে আপনার হাতে আসবে মোট ৭,১৩,৬৫৯, টাকা যেটি শুধুমাত্র মাসিক ১০,০০০ বিনিয়োগেই সম্ভব। এখানে আপনি যেমন টাকা বিনিয়োগ করবেন সেই হিসেবে আপনি অতিরিক্ত বেশি টাকা পেয়ে যাবেন।

তবে আপনি যে সময় একাউন্ট খুলবেন সেই সময় অনুযায়ী প্রতি মাসে টাকা জমা করতে হবে। যদি আপনি মাসের ১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে অ্যাকাউন্ট খোলেন, তবে প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে কিস্তি জমা দিতে হবে। আবার, ১৬ তারিখের পর খোলা হলে মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে টাকা জমা করতে হবে। এখানে আপনি যেকোন পদ্ধতির মাধ্যমে টাকা জমা করতে পারেন নগদ বা চেক যেকোন মাধ্যমে এখানে উপযুক্ত।

তবে যদি কোন মাসে কোন ব্যক্তি কিস্তি জমা না করে তাহলে প্রতি ১০০ টাকায় ১ টাকা হিসেবে জরিমানা দিতে হবে। তবে এখানে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে টানা চার মাস কীর্তি জমা না করলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখানেও সুবিধা রয়েছে—যদি কারো অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সে চাইলে আবার পুনরায় দুমাসের মধ্যে চালু করতে পারেন। অর্থাৎ আপনি এখানে অ্যাকাউন্ট চালু করলে সমস্ত ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়ে যাবেন।

 

কোন ব্যক্তি যদি চান তাহলে এখানে অগ্রিম কিস্তির টাকাও জমা করতে পারেন। বিশেষভাবে মনে রাখবেন যদি আপনি ৬ মাসের কিস্তি একসঙ্গে আগাম জমা দেন, তাহলে পাবেন ১০ ছাড়। আর ১২ মাসের জন্য অগ্রিম কিস্তি জমা করলে মিলবে ৪০ ছাড়। এই সুবিধা অ্যাকাউন্ট খোলার সময় বা পরেও নেওয়া যায়। অর্থাৎ অগ্রিম টাকা জমা দিলে এখানে আরও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

 

এই RD স্কিমের আরো একটি বিশেষ বড় সুবিধা হল আপনি যদি এখানে নাম নথিভুক্ত করেন তাহলে আপনি বড় আঙ্কেল লোন পেতে পারেন। যদি আপনি ঠিকঠাক টাকা জমা করেন এবং আপনার অ্যাকাউন্টে ১২টি কিস্তি জমা থাকে, তাহলে আপনি মোট জমার ৫০% পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। তবে আপনি যদি এখান থেকে লোন নেন তাহলে লোনের উপর ২% অতিরিক্ত সুদ দিতে হবে। এই লোন নেওয়ার পরে সেটি আপনি মাসিক কিস্তির মাধ্যমে বা এককালীন যে কোনভাবেই শোধ করে দিতে পারেন। নির্ধারিত সময়ে লোন ফেরত না দিলে, ম্যাচুরিটির টাকা থেকে মূল লোন ও সুদের অঙ্ক কেটে নেওয়া হবে।

আপনার মেয়াদ পূর্ণ হলে অর্থাৎ ৫ বছরের শেষে আপনি পুরো টাকা সুদসহ হাতে পাবেন। চাইলে আপনি আরও ৫ বছরের জন্য এই স্কিমের মেয়াদ বাড়াতে পারেন। তবে অতিরিক্ত সময়ে নিয়মিত টাকা জমা না দিলে, শুধুমাত্র সেভিংস অ্যাকাউন্টের মতো সুদ প্রযোজ্য হবে।

অ্যাকাউন্টধারকের মৃত্যু হলে, নমিনি যদি কেউ থাকে তাহলে তার প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়ে টাকা তুলে নিতে পারবেন। চাইলে ওই অ্যাকাউন্ট আগের মেয়াদ পর্যন্ত চালিয়ে নিয়ে যাওয়াও সম্ভব।

সব মিলিয়ে পোস্ট অফিসের RD স্কিম একটি নিরাপদ, স্থিতিশীল ও লাভজনক বিনিয়োগের একটি বিরাট বড় সুযোগ। যদি আপনি মাসে ১০০ বা তার বেশি টাকা জমা রেখে ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চান, তাহলে আজই এই স্কিমে বিনিয়োগ শুরু করুন এবং গ্যারান্টিযুক্ত রিটার্নের পথে এক ধাপ এগিয়ে যান এবং আপনার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করুন।

Leave a Comment