পরিপারে কন্যা সন্তান থাকলে পাবেন ৫০০০ টাকা, দেখুন কারা ও কীভাবে আবেদন করবেন

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নারীর ক্ষমতায়ন এবং কন্যা সন্তানদের কল্যাণে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে। তবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার সম্প্রতি যে উদ্ভাবনী ও মানবিক উদ্যোগ নিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ‘লাডলি বহনা’ প্রকল্পের আওতায় এবার কন্যা সন্তানের জন্ম হলে মিলবে ৫০০০ টাকা অনুদান, যা মা ও শিশু উভয়ের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার এক সাহসী প্রয়াস।

কি এই ‘লাডলি বহনা’ প্রকল্প?

‘লাডলি বহনা’ প্রকল্প মূলত ওই রাজ্য সরকারের একটি সামাজিক কল্যাণমূলক স্কিম, যার মূল লক্ষ্য হলো নারী স্বনির্ভরতা ও কন্যা সন্তানদের আর্থিকভাবে সুরক্ষা প্রদান। এই প্রকল্পের আওতায় সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের মাসিক আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়, তবে সম্প্রতি একটি নতুন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এই প্রকল্পের প্রভাব আরও বিস্তৃত করা হয়েছে।

নতুন ঘোষণা: কন্যা সন্তানের জন্মে ৫০০০ টাকা!

১৬ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে মধ্যপ্রদেশ সরকার ঘোষণা করেছে যে, যে পরিবারে কন্যা সন্তানের জন্ম হবে, তারা ৫০০০ টাকা এককালীন সহায়তা পাবে। এই অর্থ প্রদান করা হবে সরাসরি মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে, যাতে অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।

এতে শুধু সদ্যোজাত কন্যার স্বাস্থ্য ও পুষ্টির খেয়াল রাখা সম্ভব হবে না, বরং পরিবারের মধ্যেও এক ইতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে যে কন্যা সন্তান বোঝা নয়, বরং আশীর্বাদ।

এই প্রকল্পের পেছনের উদ্দেশ্য কী?

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বহুদিন ধরেই নারীর ক্ষমতায়ন ও সম্মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। এই নতুন সুবিধাটির উদ্দেশ্য হলো:

  • কন্যা সন্তানের জন্মকে উৎসাহিত করা
  • সমাজে কন্যা সন্তানকে গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান বাড়ানো
  • শিশুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি নিশ্চিত করা
  • আর্থিক দিক থেকে দুর্বল পরিবারগুলিকে সহায়তা করা

কে এই সুবিধা পাবেন?

এই সহায়তা পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত মানতে হবে:

  1. শিশুটি মধ্যপ্রদেশে জন্ম নিতে হবে।
  2. মা’র নাম ‘লাডলি বহনা’ প্রকল্পে নথিভুক্ত থাকতে হবে।
  3. মা ও শিশু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিয়মিত চেকআপে অংশ নিয়েছে এমন প্রমাণ দেখাতে হবে।
  4. শিশুটির জন্ম রেজিস্ট্রেশন এবং মা’র ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক।

সমাজে এই উদ্যোগের প্রভাব

এই প্রকল্পের মাধ্যমে একদিকে যেমন কন্যা সন্তানের গুরুত্ব বাড়বে, অন্যদিকে দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবারগুলোও একটি আর্থিক সাহারা পাবে। সমাজে কন্যা ভ্রূণ হত্যা, অপুষ্টি এবং নারী অবমূল্যায়নের বিরুদ্ধে একটি শক্ত বার্তা পৌঁছাবে।

মধ্যপ্রদেশ সরকারের এই নতুন পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে একটি আশাব্যঞ্জক উদ্যোগ। এটি শুধু অর্থনৈতিক সহায়তা নয়, এটি একটি সামাজিক বার্তা – কন্যা সন্তান বোঝা নয়, তারা গর্বের বিষয়।

এই ধরনের উদ্যোগ যদি দেশের অন্যান্য রাজ্যেও অনুসরণ করা হয়, তাহলে আমরা একটি সমতার সমাজ গঠনের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবো। কন্যা সন্তানের জন্ম হোক আনন্দের, সম্মানের ও গর্বের কারণ।

Leave a Comment