সুপ্রিম কোর্ট অবমাননার অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নোটিশ, SSC  নিয়ে রাজনীতিতে নতুন আলোড়ন

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে আবারও সুপ্রিমকোর্টের তরফ থেকে চাপ সৃষ্টি করা হলো। সাম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে নোটিশ জারির ঘটনায়। সূত্র অনুযায়ী, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে মুখ্যমন্ত্রীর কিছু মন্তব্য আইনগতভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছু মন্তব্য করায় ওই মন্তব্যের উপর ভিত্তি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে নোটিশ জারি করা হয়েছে।

২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল বাতিল করে উচ্চ আদালত যে রায় দেয়, তাতে প্রায় ২৫ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থী কর্মচ্যুত হন। এই রায়ের পর রাজনৈতিক মহল তুঙ্গে। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য রাখছেন। এমনই এই রায়ের পর মুখ্যমন্ত্রী এক প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আদালতের রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বলেন, “আমার হৃদয় পাথর হয়ে গেছে… এটা কোনো বিচার হতে পারে না।” আদালতের রায়ের উপর এমন মন্তব্য করায় তাঁর এই বক্তব্যে অসন্তুষ্ট এক আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ দাখিল করেন এবং তাতে আদালত অবমাননার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে একটি নোটিশ দেওয়া হয়।

তবে এই নোটিশকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে একেক জন একেক রকম মন্তব্য করছেন। অনেকেই মনে করছেন বিচারব্যবস্থার প্রতি সম্মান বজায় রাখা সাংবিধানিক কর্তব্য হলেও, রাজনৈতিক মহলে  মুখ্যমন্ত্রীর আবেগপ্রবণ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আদালত অবমাননার অভিযোগ কিছুটা অতিসংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তবে এই বিষয়ে আদালত যে নোটিশ জারি করেছে, তা স্পষ্টভাবে দেখায়—ন্যায়বিচার প্রক্রিয়াকে অসম্মানজনক মন্তব্য থেকে রক্ষা করতে উচ্চ আদালত কঠোর হতে প্রস্তুত। উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কেউ প্রশ্ন তুললে উচ্চ আদালত তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য।

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ নিয়ে জানিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনোই আদালতের প্রতি অসম্মান দেখাননি। বরং তিনি শুধু সাধারণ মানুষের দুর্দশার কথা প্রকাশ করেছেন। দলীয় মুখপাত্রের দাবি, এই অভিযোগ রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অনেকে মনে করছেন এটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের উস্কানিতে হয়েছে।

বর্তমানে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনায় থাকায়, আগামী দিনে এই মামলার রায় রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা দেখার অপেক্ষা। তবে এটুকু নিশ্চিত যে, রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রাজনীতির মানচিত্রে নতুন এক অধ্যায় সূচিত করছে।

Leave a Comment