পশ্চিমবঙ্গে শিলাবৃষ্টির ইঙ্গিত! একাধিক জেলায় ঝড়-বজ্রপাতের সম্ভাবনা, তাপমাত্রাও নামবে

দীর্ঘদিন পর পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়ায় বিরাট বড় পরিবর্তন ঘটল। ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপচার ধরনের প্রচুর ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়। এরই মধ্যে উত্তরবঙ্গের শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচুর বজ্রবিদ্যুৎ সহজ ঝড় বৃষ্টি। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে বলা হয়েছে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহেই পশ্চিমবঙ্গের আকাশে দেখা দেবে কালো মেঘ, সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলাতে হতে পারে বজ্রবিদ্যুৎ সহ শিলাবৃষ্টিও । এর প্রভাব পড়বে তাপমাত্রার উপরেও এই বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তরবঙ্গসহ দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলায় হ্রাস পাবে দিনের গরম অনুভব।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বেশ কিছু সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে এর সঙ্গে বলা হয়েছে আগামী শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টির এমনকি শিলাবৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কিছু জেলাগুলিতে, যেমন —ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে এবং কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এই তাপমাত্রা পরিবর্তনের পাশাপাশি, দক্ষিণবঙ্গে বেশ কিছু জেলায় বর্তমান যে তাপমাত্রা রয়েছে তার থেকে তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।

কলকাতার আবহাওয়ায় কেমন প্রভাব পড়বে?

পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতাতেও আবহাওয়ার তুমুল পরিবর্তন দেখা যাবে। আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে দুপুর পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার থাকলেও, বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। আজ কলকাতা শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৫০ থেকে ৮৯ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। তাই গরমের পরিমাণ অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে।

উত্তরবঙ্গেও থাকবে ঝড়ের প্রভাব

আবহাওয়ার যে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে এর ফলে এবারের ঝড় শুধুমাত্র দক্ষিণবঙ্গে সীমাবদ্ধ থাকবে না, দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলাতে ইতিমধ্যেই আগাম সতর্কবার্তা জানানো হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি—এই পাঁচ উত্তরবঙ্গের জেলাতেও মঙ্গলবার বা বুধবার থেকে ঝড় দেখা দিতে পারে, শুধু ঝড় নয় এর পাশাপাশি প্রচুর বজ্রপাত এবং দীক্ষিত শিলা বৃষ্টিও দেখা দিতে পারে বলে জানানো হয়েছে। ঝড়ের গতি ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। তাই জনসাধারণকে আগে থেকে আগাম সতর্কবার্তা অবলম্বন করার কথা জানিয়েছে। এর পাশাপাশি, সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলাতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে প্রতিদিনই বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যারা পাহাড়ে যাওয়ার মনস্থির করেছেন তাদের ভেবেচিন্তে পাহাড়ের রওনা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।

বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপই মূল কারণ

আবহাওয়ার এই তুমুল পরিবর্তনের মূল কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, এই পরিবর্তনের মূল কারণ বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ। এর প্রভাবে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, অসম, মেঘালয়, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি ও কেরলের মতো রাজ্যেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অন্যান্য জেলাগুলোতেও আগাম সতর্কবার্তা জানানো হয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে।

তবে যাই হোক এই তীব্র গরমের মাঝে গরমের এই অকাল বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ঝড়-বজ্রপাতের কারণে সতর্ক থাকতে বলছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে এই বৃষ্টি সাধারণ মানুষের উপকার করলেও বিশেষ করে কৃষকদের জন্য এই সময়ে শিলাবৃষ্টি চিন্তার কারণ হতে পারে। তাই যাঁরা এই সপ্তাহে যাত্রার পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের আগাম সতর্কতা অবলম্বন করাই উপযুক্ত হবে।

Leave a Comment